গেঁটেবাত বা গাউট হলো অনেক উপসর্গের সমষ্টি। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষ গেঁটেবাত রোগের সাথে পরিচিত। গেঁটেবাত কয়েকটি অতি প্রাচীন রোগের মধ্যে একটি। আজ থেকে প্রায় ৮০০ বছর আগে গেঁটেবাতের নাম প্রথমবারের মতো গাউট রাখা হয়।
পুরুষদের এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। গেঁটেবাত সাধারণত কমবয়সী পুরুষ ও বেশিবয়সী মহিলাদের হয়ে থাকে। এ ছাড়াও কৈশোর-উত্তর থেকে মধ্যবয়সের পুরুষদের এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি বলে মনে করেন আধুনিক বিজ্ঞানীরা। মহিলাদের সাধারণত রোগ হয় না বললেই চলে, তবে স্রাব-উত্তর প্রৌঢ় মহিলা অর্থাৎ ঋতুস্রাব ব হওয়ার পর মহিলাদের মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে। শহরে ধনীসমাজ থেকে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ রোগের প্রাদুর্ভাব একেবারেই কম বলে মনে করা হয়।
পুরুষদের এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। গেঁটেবাত সাধারণত কমবয়সী পুরুষ ও বেশিবয়সী মহিলাদের হয়ে থাকে। এ ছাড়াও কৈশোর-উত্তর থেকে মধ্যবয়সের পুরুষদের এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি বলে মনে করেন আধুনিক বিজ্ঞানীরা। মহিলাদের সাধারণত রোগ হয় না বললেই চলে, তবে স্রাব-উত্তর প্রৌঢ় মহিলা অর্থাৎ ঋতুস্রাব ব হওয়ার পর মহিলাদের মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে। শহরে ধনীসমাজ থেকে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ রোগের প্রাদুর্ভাব একেবারেই কম বলে মনে করা হয়।
গেঁটেবাত একপ্রকার সিন্ড্রোম যা ইউরেট নামক একপ্রকার লবণদানা জমে জোড়া বা সËিত সৃষ্ট প্রদাহ, যা দেহের রক্তের প্লাজমায় অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতির ফলেই ঘটে থাকে। গেঁটেবাত স্বল্পকালীন তীব্র প্রদাহ বা দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ এই দুই প্রকারের হতে পারে। আবার যে কারণে রক্তের ইউরেট লবণ বেড়ে যায় তা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন- পারিপার্শ্বিক বা পরিবেশগত কারণ, ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাসের কারণে বা ব্যক্তির জন্মগত ত্রুটির কারণে, যাকে জিনেটিক কারণও বলা যায়।
গেঁটেবাতের কারণগুলোর মধ্যে রক্তে অতিরিক্ত ইউরেট লবণ বা ইউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতির কথা আগেই বলা হয়েছে। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড দেহে দু’ভাবে জমতে পারে। যেমনঃ অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন এবং ইউরিক অ্যাসিড দেহ থেকে নির্গত হতে বাধাপ্রাপ্ত হওয়া। ইউরিক অ্যাসিড দেহ থেকে সাধারণত কিডনির সাহায্যে বের হয়। কোনো কারণে, বিশেষ করে কিডনির রোগের কারণে কিডনির কর্মক্ষমতা হ্রাসে অসুবিধা হতে পারে।
গেঁটেবাতের লক্ষণ
এই রোগের প্রধান প্রধান উপসর্গের মধ্যে পায়ের বুড়ো আঙুলের অসহনীয় ব্যথাসহ হাঁটু, গোড়ালি বা কাঁধে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে বেড়ে যেতে পারে।
এই রোগের প্রধান প্রধান উপসর্গের মধ্যে পায়ের বুড়ো আঙুলের অসহনীয় ব্যথাসহ হাঁটু, গোড়ালি বা কাঁধে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে বেড়ে যেতে পারে।
? হঠাৎ তীব্র ব্যথা, এমনকি ব্যথার দরুন ঘুম ভেঙে যাওয়া। ? পায়ের বুড়ো আঙুলের গোড়া ফুলে লাল হয়ে যাওয়া। ? হাঁটু, কনুই বা অন্য যেকোনো জোড়া বা স িফুলে যাওয়া। ? ক্রমান্বয়ে হাড় ও তরুণাস্থি ক্ষয় হতে থাকে। ? ইউরেট লবণের দানা জমাট বেঁধে টফি তৈরি করতে পারে। ? ক্রমান্বয়ে জোড়া বা স িস্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাতে পারে।
গেঁটেবাতের চিকিৎসা ও এর প্রতিকার
চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমত, রোগীর আক্রান্ত স্থানকে বিশ্রামে রাখতে হবে। বেদনানাশক ওষুধ হিসেবে ওষনসশপয়ভথধমষ বেশ কার্যকর। তা ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এলুপিউরিনল ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। এই রোগীদের পিউরন সমৃদ্ধ খাবার যেমন, কবুতরের গোশত, হাঁসের গোশত, গরুর লাল গোশত, সামুদ্রিক মাছ, মাছের ডিম, ছোট মাছ, মগজ, কলিজা, পুঁইশাক, ফুলকপি ও সিমের বিচি বর্জন করা উচিত।
গেঁটেবাতের চিকিৎসায় প্রাথমিক তীব্র ব্যথার জন্য বেশ কিছু ব্যথার ওষুধের কথা বলা হয়েছে, যার সবগুলোকে একসাথে এনএসআইডি বলা হয়। এদের মধ্যে ইন্ডোমেথাসিন এ ব্যাপারে বহুল ব্যবহৃত। গেঁটেবাতের অ্যাকুট অবস্থার তীব্র ব্যথার জন্য কোলচিসিনও খুবই কার্যকর। গেঁটেবাতের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য অনেক ওষুধ থাকলেও এলুপিউরিনল নামক ওষুধটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। এ ছাড়াও রক্তের ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য ইউরিকোসইউরিক এজেন্ট নামে কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ প্রোবেনাসিড। অসুস্থ হলে রোগীর প্রয়োজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া, নিজে ওষুধ খাওয়া নয়। তা ছাড়া গেঁটেবাত হলে হাত বা পায়ের দিকে বেশি নজর দিতে হবে যাতে হাত বা পায়ে কোনো আঘাত না লাগে। কারণ আঘাত লাগলে এ রোগ তীব্রতা বেড়ে যায়। তাই আসুন, গেঁটেবাত হলে এর উপযুক্ত চিকিৎসা করাই এবং এ রোগকে নিয়ন্ত্রণ করি।
লেখকঃ বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন, বঙ্গবু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমত, রোগীর আক্রান্ত স্থানকে বিশ্রামে রাখতে হবে। বেদনানাশক ওষুধ হিসেবে ওষনসশপয়ভথধমষ বেশ কার্যকর। তা ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এলুপিউরিনল ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। এই রোগীদের পিউরন সমৃদ্ধ খাবার যেমন, কবুতরের গোশত, হাঁসের গোশত, গরুর লাল গোশত, সামুদ্রিক মাছ, মাছের ডিম, ছোট মাছ, মগজ, কলিজা, পুঁইশাক, ফুলকপি ও সিমের বিচি বর্জন করা উচিত।
গেঁটেবাতের চিকিৎসায় প্রাথমিক তীব্র ব্যথার জন্য বেশ কিছু ব্যথার ওষুধের কথা বলা হয়েছে, যার সবগুলোকে একসাথে এনএসআইডি বলা হয়। এদের মধ্যে ইন্ডোমেথাসিন এ ব্যাপারে বহুল ব্যবহৃত। গেঁটেবাতের অ্যাকুট অবস্থার তীব্র ব্যথার জন্য কোলচিসিনও খুবই কার্যকর। গেঁটেবাতের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য অনেক ওষুধ থাকলেও এলুপিউরিনল নামক ওষুধটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। এ ছাড়াও রক্তের ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য ইউরিকোসইউরিক এজেন্ট নামে কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ প্রোবেনাসিড। অসুস্থ হলে রোগীর প্রয়োজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া, নিজে ওষুধ খাওয়া নয়। তা ছাড়া গেঁটেবাত হলে হাত বা পায়ের দিকে বেশি নজর দিতে হবে যাতে হাত বা পায়ে কোনো আঘাত না লাগে। কারণ আঘাত লাগলে এ রোগ তীব্রতা বেড়ে যায়। তাই আসুন, গেঁটেবাত হলে এর উপযুক্ত চিকিৎসা করাই এবং এ রোগকে নিয়ন্ত্রণ করি।
লেখকঃ বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন, বঙ্গবু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।