Subscribe For Free Updates!

We'll not spam mate! We promise.

সেক্স এডুকেশনঃ নিষিদ্ধ কিছু নয়

আধো বোল ছেড়ে কথা বলতে শুরু করতে না করতেই আপনার বাচ্চা দুম করে জানতে চাইতে পারে, ‘মা, আমি কিভাবে হলাম?’ কি উত্তর দেবেন আপনি? হয়তো আপনার বাচ্চা বড় হয়ে পা দিয়েছে বয়ঃসন্ধিতে। ওকে খুব অচেনা লাগছে আজকাল। এড়িয়ে চলছে আপনাকে। অবাক হচ্ছেন বা রেগে যাচ্ছেন ওর কিছু অভ্যাসে, আচরণে। অথচ আপনার হাত-পা বাঁধা। কিছুই করার নেই আপনার? হয়তো ক্লাস নাইনের মেয়ে জানতে চাইছে একান্তে, ‘ঋতুচক্রের ব্যাপারটা আসলে কি?

আধো বোল ছেড়ে কথা বলতে শুরু করতে না করতেই আপনার বাচ্চা দুম করে জানতে চাইতে পারে, ‘মা, আমি কিভাবে হলাম?’ কি উত্তর দেবেন আপনি? হয়তো আপনার বাচ্চা বড় হয়ে পা দিয়েছে বয়ঃসন্ধিতে। ওকে খুব অচেনা লাগছে আজকাল। এড়িয়ে চলছে আপনাকে। অবাক হচ্ছেন বা রেগে যাচ্ছেন ওর কিছু অভ্যাসে, আচরণে। অথচ আপনার হাত-পা বাঁধা। কিছুই করার নেই আপনার? হয়তো ক্লাস নাইনের মেয়ে জানতে চাইছে একান্তে, ‘ঋতুচক্রের ব্যাপারটা আসলে কি? কেন এমন হয়?’ কি বলবেন? হয়তো মানসিকভাবে ম্যাচিওরড হওয়ার আগেই শরীরে খুব বাড়ছে আপনার মেয়ে। খুব ভয় করছে আপনার। কখন কি বিপদ ঘটে যায়! চুপ করে থাকবেন? নাকি কিভাবে ব্যাপারটা বলা যায় ওকে ভাবতে ভাবেতই কাটিয়ে দেবেন সময়? বিয়ে ঠিক হয়েছে মেয়ের। বিয়ের ঠিক আগে ও জানতে চাইছে ‘সেফ পিরিয়ড’ কোনটা? এড়িয়ে যাবেন? লজ্জা পেয়ে সরে যাবেন? নাকি নিজেকে দুষবেন নিজেই ব্যাপারটা জানেন না বলে?
না, আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছি না। শুধু জীবনের একান্ত জরুরি এক বিশেষ শিক্ষা সম্পর্কে আপনাকে সচেতন করে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে এই নিবন্ধ। জরুরি ব্যাপার হল ‘সেক্স এডুকেশন’। বাংলায় বিজ্ঞানসমমত যৌনশিক্ষা। এই শিক্ষার সবচেয়ে সুন্দর আর আদর্শ নাম হতে পারে ‘ফ্যামিলি লাইফ এডুকেশন’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই নামটাই চলে। বাংলায় বলা যায় ‘পারিবারিক জীবনের শিক্ষা’।
কি ভাবছেন? এ সব আবার কেন? ভয় পাবেন না, বাজারি সেক্স ম্যানুয়াল পড়তে বলা হচ্ছে না আপনাকে। শুধুমাত্র জেনে বুঝে নিতে বলা হচ্ছে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যৌনতার বিজ্ঞান আর মনস্তত্ত্বকে। জেনে বুঝে নিতে ব্যাঙের প্রজননতন্ততেই পাঠ শেষ করার দিন শেষ। জানতে হবে মানবপ্রজননের বিজ্ঞানকে, এর মল সত্রগুলোকে। জেনে বুঝে নিতে হবে যৌবনের শুরু আর শেষ, এই দুই প্রান্তিক সময়কালের পরিবর্তন আর সমস্যাগুলোকে। জন্মনিয়ন্ত্রণ আর যৌনরোগ-এই দুটো বিষয়েও তুচ্ছ, বাস্তবসমমত ধারণা তৈরি করে নেয়া দরকার সবার জন্য।
করতেই হবে, বিকল্প নেই। যৌনতাকে নিয়ে আজও আমাদের সমাজে যে ব্যাপক শুচিবাতিকগ্রস্ততা, তা আসলে ভাবের ঘরে চুরি, এক ধরনের চরম ভন্ডামি। জীবনের জরুরি একটা অঙ্গকে ‘নিষিদ্ধ আপেল’ বানিয়ে রেখে যতই বালিতে মুখ গুঁজে থাকি আমরা, আজকের সময় তার নিজের মতো কবে উশুল করে নিচ্ছে এই না-জানা না-বোঝার দাম, সুদেমলে। প্রাক বৈবাহিক যৌন সংসর্গের ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে, বাড়ছে অবৈধ গর্ভনাশ আর তার নানা জটিলতার ঘটনা। সিফিলিস, গনোরিয়ার পাশাপাশি যৌনরোগ এইডস ঢুকে পড়েছে আপনার-আমার দেহেও। চারপাশে যৌন অপরাধ বাড়ছে ক্রমাগত, লাফ দিয়ে দিয়ে বাড়ছে যৌন হয়রানি বা ‘সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট’-এর ঘটনা। এমন একটা বিপন্ন সময়ে ‘সেক্স এডুকেশন’-এর কোনো বিকল্প নেই। আশার কথা, অনেক দেরিতে হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে মানবপ্রজনন আর এ সংক্রান্ত শিক্ষা এখন গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে আমাদের দেশেও।
বাচ্চার প্রশ্নের ঠিক ঠিক উত্তর দিতে শিখুন
মাঝে-মধ্যে বাচ্চারা জন্মরহস্য নিয়ে নানা প্রশ্ন করবেই। ওদের চুপ করিয়ে দেবেন না বা অন্য কথায় ভোলাতে যাবেন না। এরকম প্রশ্নের উত্তর হবে বিজ্ঞানসম্মত অথচ বাস্তবমুখী। ঘাবড়ে যাবেন না, ফিসফিস করে বলবেন না, ছেলেমেয়ের এরকম প্রশ্নের উত্তর দিন সহজ-সরলভাভাবে, গল্পচ্ছলে। বাচ্চা যেন না ভাবে ব্যাপারটায় আপনি অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন বা কিছু লুকোচ্ছেন।
‘আগে বড় হও, পরে সব জানতে পারবে’ বা ‘এ সব জানার জন্য তুমি এখনও খুব ছোট’-এরকম দায়সারা উত্তর বাচ্চার পক্ষে ক্ষতিকর। উত্তরটা কিভাবে দেবেন জানা না থাকলে বাচ্চাকে বলুন, ’বা! বেশ ভালো প্রশ্ন করেছ তুমি। এর উত্তরটা সহজে তোমাকে কিভাবে বোঝানো যাবে তা নিয়ে আমাকে একটু ভাবতে সময় দাও।’ বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে পরে বাচ্চাকে সহজ করে বুঝিয়ে দিন।
‘না’ দিয়ে বলবেন না
নর-নারীর সম্পর্ক বা জন্মরহস্য নিয়ে বাচ্চার প্রশ্নের মুখোমুখি আপনার উত্তর হবে আবশ্যিকভাবে সদর্থক। বাচ্চা অশ্লীল কথা বললে ‘এরকম কথা আর ভুলেও বলবে না’ বলে বাচ্চাকে বকলে ব্যাপারটাকে নিষিদ্ধ ভেবে এর প্রতি ওর আকর্ষণ আরও বাড়বে।
যৌনশিক্ষার বিজ্ঞান বলে, বাচ্চাকে নরম করে বলুন, ‘এরকম কথা বললে আমি খুব কষ্ট পাই। আমি কষ্ট পাই তা কি তুমি চাও? এই কথাগুলো বলতে পারেন নিজের মতো করেও।
বাচ্চাদের প্রশ্নের দুটি আদর্শ উত্তর হতে পারে এরকম-
মা আমি কি করে হলাম?
 তুমি হয়েছ আমার আর তোমার বাবার ভালোবাসা থেকে। আমরা দু’জনে ভালোবেসে তোমায় চাইলাম, তাই তো তুমি হলে সোনা!
মায়ের পেট থেকে বাচ্চা কিভাবে বেরোয়?
 মায়ের পেটের ভেতর একটা থলির মধ্যে বাচ্চা আস্তে আস্তে বড় হয়। তারপর অনেকটা বড় হয়ে জন্মের একটা রাস্তা আছে, সেই রাস্তা দিয়ে বাচ্চা মায়ের শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। ঠিক যেভাবে স্কুল ছুটি হয়ে তুমি ক্লাসের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আস।
বাচ্চার ব্যাপারে যা করবেন না
  • টিভি বা ভিডিওর মারদাঙ্গা, ধর্ষণের চেষ্টা বা শারীরিক ঘনিষ্ঠতার ছবি বাচ্চাকে গিলতে দেবেন না। আপনি সচেতন হলেই পারবেন। যৌন রসিকতা বা গল্প বাচ্চার সামনে ভুলেও নয়।
  • একটু বড় বাচ্চার সামনে বা বাচ্চাকে কাছাকাছি রেখে শরীরী ঘনিষ্ঠতার দিকে এগোবেন না।
  • সম্ভব হলে সাত-আট বছরের পর থেকে বাচ্চাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে এক বিছানায় শোয়াবেন না। সুন্দর বিকল্প হল, দাদা বা দাদীর সঙ্গে বা আলাদা বিছানায় বাচ্চাকে ঘুমাতে অভ্যস্ত করে তোলা।
  • যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলা করছে বাচ্চা, নজরে এল আপনার। ভুলেও বাচ্চাকে বকবেন না বা মারধর করতে যাবেন না। ওকে বুঝিয়ে বলুন নরম করে। বলুন, ‘এই নরম জায়গা নিয়ে খেলা করলে যে তুমি ব্যথা পাবে, কষ্ট পাবে। আর তুমি কষ্ট পেলে সব চাইতে বেশি কষ্ট পাব আমি!।
  • যৌনতা বিষয়ক বাচ্চার কোনো আকস্মিক প্রশ্ন চেপে দিতে যাবেন না। গল্পচ্ছলে উত্তর দিন। না জানলে জেনে নিয়ে পরে বলুন।
  • ছেলে বা মেয়েকে কম বয়স থেকে বিকৃতকাম পরিণত বয়স্ক পুরুষ বা নারীর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে পড়ার ব্যাপারে সাবধান হতে/সাবধান করতে ভুলবেন না। এরকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার শিকার হয়ে অনেক ছেলে মেয়ে ভবিষ্যত জীবনে নানা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়। সচেতন হন, সতর্ক থাকুন।
টিনএজের ছেলেমেয়ের বাবা-মায়েরা শিখুন
বয়ঃসন্ধি সব ছেলে মেয়ের জীবনেই এক ধরনের পরীক্ষা। শরীর-মনে দ্রুতলয়ে ঘটতে থাকা পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে উঠতে না পেরে এই সময় ছেলে মেয়েরা শরীর মনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়। ওদের এই বিশেষ সমস্যাগুলোকে জেনে বুঝে নিন, সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ওদের পাশে থাকুন বন্ধুর মতো। ওদের মনের দ্বিধাদ্বন্দ্বগুলোকে এড়িয়ে যাবেন না, সহানুভূতির সঙ্গে ওদের সমস্যাগুলো বুঝুন। ওদের সঙ্গে আলোচনা করুন খোলাখুলি, বন্ধুর ভূমিকা নিন। ছেলেদের সমস্যায় বাবা আর মেয়েদের সমস্যায় মা হতে পারেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুশকিল আসান।
  • বয়ঃসন্ধির সমস্যা আর মনস্তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করুন, বইপত্র পড়ূন সুস্থ স্বাভাবিক জীবনবোধের আলোয় ছেলে মেয়ের মধ্যে সুস্থ যৌনচেতনা গড়ে তুলতে আপনি করতে পারেন অনেকটাই।
  • প্রজন্মবাহিত ভুল ধারণা, সংস্কার আর অন্ধকার ভুলেও ছেলে মেয়ের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে ওদের সর্বনাশ করবেন না। যৌনতা ‘নোংরা, ’নিষিদ্ধ’ বা ‘খারাপ’ কোনো ব্যাপার নয়, এ হল জীবনের স্বাভাবিক এক অঙ্গ। নিজের ভুল আগে শুধরে নিন, তারপর ছেলেমেয়েদের শেখান। ‘ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বন্ধুর মতো মেশা খারাপ’ নয়, এরকম সুস্থ সম্পর্ক যৌবনের সমস্যা কমায়। পিরিয়ডের রক্ত ‘বদরক্ত’ নয়, এতে ‘পাপ’ ধুয়ে বেরিয়ে আসে না। এ হল যৌবনের স্বাভাবিক এক শারীরবৃত্তীয় ঘটনা।
যৌবনের পরিবর্তনগুলোর বিজ্ঞানকে জেনে বুঝে নিন। ছেলে মেয়েদের বোঝান।
  • কথায় কথায় তর্ক করা বা বড়দের অগ্রাহ্য করার প্রবণতা এ বয়সে থাকবেই। উত্তেজিত হবেন না, ছেলে মেয়েকে মারধর করতে যাবেন না। শাসনের আতিশয্যে সমস্যাকে জটিল না করে ওদের ভালটা ওদের বুঝিযে বলুন। সুস্থ বিতর্কে অংশ নিন।
  • এই বয়সে ছেলে মেয়ের ওপর সতর্ক নজর অবশ্যই রাখবেন। তবে সব ব্যাপারে নাক গলাতে যাবেন না। ওদের স্বাধীনতার বোধকে সমমান করতে শিখুন। এতে আপনাদের  দূরত্ব কমবে।
  • সব সময় ‘ওটা ভালো না’, ‘এটা কর না’ করতে যাবেন না। যা বলার ভালো করে, যুক্তি দিয়ে, ভালোবেসে বুঝিয়ে বলুন।
  • ওদের নিজস্ব জগতে ঢুকতে চাইবেন না। ওদের কল্পনার জগতটাকে ভেঙে দেবেন না। ওদের জগতটাকে আপনি আপনার ছাঁচে গড়তে চাইলে ওদের ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত হবেই।
  • ১৫-১৬ বছরে মা মেয়েকে বুঝিযে দিন। যৌনতার বাস্তবতা, শরীর-মনের সম্পর্ক, ঋতুচক্রের বিজ্ঞান, অতি যৌনতার বিপদ, ব্যক্তিগত সতর্কতা।
  • এই বয়সে বাবা ছেলেকে বুঝিয়ে বলুন- যৌনতার বাস্তবতা, অতি যৌনতার বিপদ, পর্ণো-গ্রাফিক ফাঁদ, অতিরঞ্জন আর অসারতা, যৌনরোগের বিস্তার আর বিপদ।
  • আর একটু বড় হলে ১৭-১৮ বছরে ওদের বুঝিয়ে বলুন- জন্মরোধের ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে, প্র্যাক বিবাহ মেলামেশার বিপদ নিয়ে, অবাধ যৌনতার সর্বনাশ আর মারাত্মক যৌনরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার বিপদ সম্পর্কে। আগে নিজে জানুন, তারপর ওদের জানান। ছেলেদের সতর্ক করুন নেশা বা মাদকাসক্তির বিপদ সম্পর্কে।
  • ছেলে বা মেয়েকে বৈজ্ঞানিক যৌনশিক্ষা পেতে সাহায্য করুন। এ ব্যাপারে বইপত্র নির্বাচনে ওদের সাহায্য করুন, ‘স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞ’-দের থেকে সাবধান করুন।
  • ছেলে বা মেয়েকে স্বমেহন(Masturbation)-এ রত বা পর্ণোগ্রাফির বইপত্র পড়তে দেখে ফেললে তখনকার মতো সরে যান। তখনই বকাবকি বা শাসন করতে যাবেন না। পরে সময় করে ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করুন ছেলেমেয়েদের সঙ্গে। যুক্তি দিয়ে, বিজ্ঞানের আলোয়। আদেশ বা নির্দেশ নয়, ভালোবাসা দিয়ে।
বয়ঃসন্দির ছেলেমেয়ের বাবা-মায়েরা জানুন
  • আপনাকে দেখেই আপনার ছেলে মেয়ে শিখবে। আপনার আচার আচরণে সংযত থাকুন।
  • ওদের সঙ্গে বসে টিভিতে সেক্স ভায়োলেন্সে ঠাসা বই দেখবেন না।
  • স্বমেহজন যৌবনের স্বাভাবিক এক অভ্যাস। এতে শরীর দুর্বল হবার, স্মৃতিশক্তি কমে যাবার বা ভবিষ্যত যৌন জীবন বিপন্ন হবার আশঙ্কা অপপ্রচার মাত্র। পরিণত স্বমেহন স্বাভাবিক, ব্যাপারটাকে বাতিক (obsession) বানিয়ে ফেললে তা অবশ্যই অস্বাভাবিক।
  • ঋতুচক্র, উর্বর সময়কাল(Unsafe Period), অনুর্বর সময়কাল (Safe Period) সম্পর্কে জানুন। ১৮ বছর নাগাদ ছেলে মেয়েকে এই ব্যাপারগুলো জানতে-বুঝতে সাহায্য করুন।
  • অবাধ যৌন সংসর্গের বিপদ নিয়ে চুপ করে থাকবেন না। ছেলে মেয়েকে এই বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করুন।
  • মুহর্তের আবেগে শরীরী রোমাঞ্চর আবেশে যৌন সংসর্গের লিপ্ত হয়ে সারা জীবন অনুতাপ করতে হয় অনেককেই। ওদের বুঝিয়ে বলুন।
  • কারও প্ররোচনায় বা ভুলে যৌনকর্মীদের কাছে গিয়ে কেউ কেউ এ বয়সে নানা যৌনরোগ বা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়। সতর্ক থাকুন ওদের সব বুঝিয়ে সতর্ক থাকতে বলুন।
বিবাহিত জীবনের যৌনশিক্ষা
‘সামাজিক ও মানসিক দিক দিয়ে বিয়ে যে কোনো মানুষের জীবনে নতুন একটা মাত্রা, যা ভালোবাসার খুব কাছাকাছি’। যৌন সম্পর্ক দাম্পত্যের গুরুত্বপূর্ণ একটা ভিত্তি, যৌন সম্পর্ক আর দাম্পত্য তবু সমার্থক নয়। কমবয়স থেকে যৌনশিক্ষার অভাবে নববিবাহিত দম্পতি বেশিরভাগ সময় একে অন্যকে না বুঝেই যৌন সম্পর্ক শুরু করেন। লজ্জা আর অস্বস্তি দিয়ে শুরু হয় দাম্পত্যের ভিত গড়া।
এ দেশে যুগযুগ ধরে মেয়েদের শেখানো হয়েছে, পুরুষের যৌন আকাঙ্ক্ষায় সাড়া দেয়াই নারীর এক মাত্র কাজ। বিজ্ঞান বলে পুরুষের মতো নারীরও রয়েছে স্বাভাবিক যৌন চাহিদা। যৌনতার আনন্দ দাম্পত্যের আনন্দের একটা অংশ। যৌনতার আনন্দ উপভোগ করতে না পারা অনেকটা ভালো খাবার আনন্দ করে খেতে না পারার মতো ব্যাপার।
বিবাহিত জীবনের  একেবারে শুরুতে আস্তে আস্তে পারসপরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সুস্থ শরীরী সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করে। শরীর- মনের এই বোঝাপড়া তৈরি না হলে সুস্থ শরীরী সম্পর্ক গড়ে না ওঠার বিবাহিত নারী-পুরুষ সুখের বৃত্তে ঢুকতে বাধা পান। এর জন্য দায়ী শরীর-মনের পারসপরিক সম্পর্ক নিয়ে ধারণার অভাব, ন্যনতম যৌনবিজ্ঞানের অভাব আর এ নিয়ে নানা ধরনের সংস্কার।
দম্পতিতে দম্পতিতে যৌন চেতনায় বা যৌনরোধ তারতম্য থাকবেই। কোনো দম্পতির বেলায় শরীরী ভালোবাসা হয় তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যাপার নয়। আবার এমন দম্পতিও রয়েছেন যাদের ভালোবাসার মল কথাই হল শরীর। বিবাহিত জীবনে দু’জনের বোঝাপড়া গড়ে উঠতে সময় লাগে। এই বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে সুস্থ যৌননীতি তৈরি করে নেয়া একান্ত প্রয়োজন। যৌনজীবন ‘নোংরা’ বা ‘পাশবিক’ কোনো জীবন নয়, মানসিক ভালোবাসার গাছের মাটির উপরকার ডালপালা হলে, শারীরিক ভালোবাসা হল মাটির নিচে থাকা গাছের শিকড়বাকড়। যৌনচাহিদা খিদে বা তেষ্টার মতোই স্বাভাবিক, এতে ‘নোংরামি’-র কিছু থাকতে পারে না।


Socializer Widget By Blogger Yard
SOCIALIZE IT →
FOLLOW US →
SHARE IT →